শিশুদের মানসিক বিকাশে বাবা-মায়ের ভূমিকা

শিশুদের মানসিক বিকাশে বাবা-মায়ের ভূমিকা

শিশুদের মানসিক বিকাশে বাবা-মায়ের ভূমিকা

শিশু মানেই এক একটি সম্ভাবনার সোনার খনি। জন্মের পর থেকে শিশুর মানসিক বিকাশ নির্ভর করে তার চারপাশের পরিবেশ, শিক্ষা এবং সবচেয়ে বড় কথা—বাবা-মায়ের আচরণ ও মনোযোগের উপর। শিশুর প্রথম শিক্ষাপ্রাপ্তির স্থান হলো তার পরিবার, আর সবচেয়ে কাছের মানুষ হলো মা-বাবা। তাই, বাবা-মায়ের ভূমিকা এখানে অপরিসীম।

ভালোবাসা ও নিরাপত্তার পরিবেশ তৈরি

একটি শিশু তখনই মানসিকভাবে সুস্থ ও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে পারে, যখন সে ভালোবাসা, স্নেহ ও নিরাপত্তার পরিবেশে বড় হয়। বাবা-মায়ের কাছ থেকে নিরন্তর ভালোবাসা ও ইতিবাচক মনোভাব পেলে শিশুর মনে আত্মবিশ্বাস জন্মায়, যা তার মানসিক বিকাশের মূল ভিত তৈরি করে।

সংবেদনশীল শোনা ও বোঝার মনোভাব

শিশুর অনুভূতি, চিন্তা এবং ছোট ছোট প্রশ্নগুলো গুরুত্ব সহকারে শোনা উচিত। এতে শিশু শেখে যে তার কথা মূল্যবান এবং সে নিজেকে প্রকাশ করতে পারে। এতে করে সে আরও উন্মুক্ত ও কৌতূহলী হয়ে ওঠে।

খেলার মাধ্যমে শেখানো

খেলা শিশুদের মানসিক বিকাশের অন্যতম বড় মাধ্যম। বাবা-মা যদি সময় বের করে সন্তানের সাথে খেলেন এবং নতুন নতুন খেলনা বা সৃজনশীল কার্যক্রমে যুক্ত করেন, তবে শিশুর কল্পনাশক্তি, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা এবং সামাজিক আচরণ বিকশিত হয়।

ইতিবাচক আচরণ এবং অনুকরণ

শিশুরা বড়দের দেখেই শেখে। বাবা-মায়ের আচরণ, কথা বলার ধরন, রাগ-দুঃখ প্রকাশের উপায়—সবকিছুই শিশু মনোযোগ দিয়ে অনুসরণ করে। তাই বাবা-মায়ের উচিত ইতিবাচক, ধৈর্যশীল এবং সহানুভূতিশীল আচরণ করা, যাতে শিশুর মধ্যেও সেই গুণাবলী গড়ে ওঠে।

পাঠ্যপুস্তকের বাইরে শেখানো

শুধু বইয়ের পড়াশোনায় সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তব জীবনের নানা দিক সম্পর্কে শেখানোও জরুরি। প্রকৃতি দেখা, নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া, গল্প শোনা কিংবা হাতে-কলমে কিছু বানানো—এসব অভিজ্ঞতা শিশুর চিন্তার জগৎ প্রসারিত করে।

শিশুর মানসিক বিকাশে বাবা-মার ভূমিকা কোনো পাঠ্যবইয়ে শেখানো যায় না—এটা ভালোবাসা, সময় এবং সচেতনতার মাধ্যমে গড়ে ওঠে। প্রতিদিনের ছোট ছোট কাজ ও আচরণের মধ্য দিয়ে বাবা-মায়ের কাছ থেকে শিশুরা শেখে কিভাবে একজন সুস্থ, আত্মবিশ্বাসী এবং মানবিক মানুষ হয়ে উঠতে হয়।

একজন বাবা বা মা হিসেবে সন্তানের শৈশবের এই সময়টুকুতে সঠিক মনোযোগ দিলে, ভবিষ্যতে তার ব্যক্তিত্ব গঠনে তা দারুণ প্রভাব ফেলবে।

RELATED ARTICLES